শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে ২০১৯ সালের ৩০শে মে শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের কার্যকাল শুরু হয়। শ্রী মোদী হলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাঁর জন্ম স্বাধীনোত্তরকালে। ২০১৪-১৯ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শ্রী মোদী প্রথমবার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০১৪’র মে মাস পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময়ে তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১৪ ও ২০১৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে শ্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করে। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনের পর এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করলো।
‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিসওয়াস’ – এই মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রী মোদী প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এমন এক পরিবর্তন এনেছেন, যার উদ্দেশ্যই হ’ল – সর্বব্যাপী, উন্নয়ন-কেন্দ্রীক এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা। অন্ত্যোদয় অর্থাৎ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি ও পরিষেবাগুলির সুবিধাপ্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী দ্রুততার ও দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন।
অগ্রণী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত রেকর্ড গতিতে দারিদ্র্য মুক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দরিদ্র স্বার্থ-কেন্দ্রীক একগুচ্ছ পদক্ষেপের দরুণ এটা সম্ভব হয়ে উঠছে।
আজ ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মসূচি আয়ুষ্মান ভারত রূপায়ণ করা হচ্ছে। ৫০ কোটি দরিদ্র ও নব্যমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে কর্মসূচির আওতায় নিয়ে এসে সুলভে গুণগত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে।বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘দ্য ল্যানসেট’ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জার্নাল বা পত্রিকায় আয়ুষ্মান ভারতের প্রশংসা করে বলা হয়েছে যে, এই কর্মসূচি ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ঘাটতিগুলিকে পূরণ করার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। পত্রিকায় সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা সকলের নাগালে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রয়াসের ভুয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।
দরিদ্র মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টিকে বড় বাধা হিসাবে বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার সূচনা করেন। এখনও পর্যন্ত ৩৫ কোটিরও বেশি জনধন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। জনধন যোজনার আওতায় খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি কেবল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে না, একই সঙ্গে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরে থাকা মানুষকেও ব্যাঙ্ক পরিষেবার আওতায় নিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে। এরফলে, ক্ষমতায়নের একাধিক রাস্তা খুলে গেছে।
জনধন যোজনা চালু করা থেকে আরও এক কদম এগিয়ে গিয়ে শ্রী মোদী সমাজের সবচেয়ে বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষকে বিমা ও পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে জন সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। জনধন–আধার–মোবাইল – এই ত্রিমুখী নীতির ফলে মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকার অবসান ঘটানো হয়েছে এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পরিষেবার সুফল পৌঁছে দিতে স্বচ্ছতা ও গতি সুনিশ্চিত হয়েছে।
এই প্রথমবার অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ৪২ কোটিরও বেশি মানুষ প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মানধন যোজনার আওতায় পেনশনের সুবিধা পাচ্ছেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই ব্যবসায়ীদের জন্যও অনুরূপ পেনশন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়।
দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দিতে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সূচনা হয়। এই কর্মসূচি ধোঁয়ামুক্ত রান্নাঘর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এর ফলে, ৭ কোটি সুফলভোগী, যাঁদের বেশিরভাগই মহিলা, তাঁরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন।
স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে যে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, সেগুলির বৈদ্যুতিকীকরণ করা হয়েছে।
সব ভারতীয়র জন্য গৃহের সংস্থান সুনিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, তার বাস্তবায়নে ২০১৪-১৯ পর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য আবাসনের লক্ষ্য পূরণে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।
কৃষি ক্ষেত্র শ্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০১৯ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে কৃষকদের আর্থিক সুবিধাদানের কথা ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি নামে এই কর্মসূচি ঘোষণার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ – এ চালু হয়। কর্মসূচি চালু হওয়ার পর থেকে নিয়মিতভাবে কৃষকদের কাছে কিস্তির টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর দ্বিতীয়বার কার্যকালের মেয়াদে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধাগুলি সমস্ত কৃষকের কাছেই পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে যে সমস্ত কৃষকের ৫ একর পর্যন্ত জমি ছিল, তাঁদের জন্য এই কর্মসূচির সুবিধা সীমিত ছিল। সমস্ত কৃষকের কাছে এই সুবিধা সম্প্রসারিত হওয়ার ফলে প্রতি বছর কৃষক কল্যাণে বছরে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
শ্রী মোদী কৃষি ক্ষেত্রে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে – সয়েল হেলথ কার্ড, কৃষিজ পণ্যের আরও বেশি বাজারজাত করার লক্ষ্যে ই-ন্যাম বা ই-জাতীয় কৃষি বাজার এবং কৃষি সেচ। জলসম্পদের সুষ্ঠু বন্টনের লক্ষ্যে ও সুদক্ষ ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৯ সালের ৩০ মে নতুন দপ্তর হিসাবে জল শক্তি মন্ত্রকের সূচনা করেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশ জুড়ে স্বচ্ছতার লক্ষ্যে গণঅভিযান স্বচ্ছ ভারত মিশনের সূচনা করেন। এই অভিযানের প্রভাব ও কার্যকারিতা আজ ইতিহাস তৈরি করেছে। বর্তমানে দেশে স্বচ্ছতার পরিধি ২০১৪’র ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৯ শতাংশ হয়েছে। একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে। গঙ্গানদীর সংস্কার ও পুনরুজ্জীবনে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) স্বচ্ছ ভারত মিশনের প্রশংসা করে বলেছে, এই অভিযান ৩ লক্ষ জীবন বাঁচাতে পারে।
শ্রী মোদী মনে করেন, পরিবর্তনের লক্ষ্যে পরিবহণ এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে। জাতীয় মহাসড়ক, রেলওয়ে, আইওয়ে এবং জলপথের বিকাশ ঘটানো হচ্ছে। বিমান পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও গণ-বান্ধব করে গড়ে তুলতে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসারে উড়ান প্রকল্পের সূচনা হয়েছে।
ভারতকে আন্তর্জাতিক স্তরে এক অগ্রণী উৎপাদক দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সূচনা করেছেন। এই কর্মসূচি চালু হওয়ার ফলে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। উদাহরণ-স্বরূপ বলা যায়, ভারতে মোবাইল ফোন উৎপাদন ইউনিটের সংখ্যা ২০১৪’র ২ থেকে বেড়ে ২০১৯ – এ ১২২ হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও ভারতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সূচকে ভারত ২০১৪’র ১৪২তম স্থান থেকে ২০১৯ – এ ৭৭তম স্থানে উঠে এসেছে। ২০১৭ সালে সংসদের এক ঐতিহাসিক অধিবেশনে সরকার জিএসটি চালু করে। এই কর ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে ‘এক দেশ, এক কর’ ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদকালে তিনি ভারতের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। ভারতে এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি ‘দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ গড়ে উঠেছে। এই মূর্তি সর্দার প্যাটেলের প্রতি যথাযোগ্য শ্রদ্ধার নিদর্শন। বিশেষ এক গণঅভিযানের অঙ্গ হিসাবে এই মূর্তি নির্মাণ করা হয়। মূর্তি নির্মাণে কৃষকদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম-সহ দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মাটি ব্যবহার করা হয়। এই বিরাট কর্মযজ্ঞই ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর মানসিকতাকে প্রতিফলিত করে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী পরিবেশগত বিষয়গুলি সম্পর্কেও গভীরভাবে সংবেদনশীল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরও একবার এক দূষণমুক্ত ও সবুজায়িত বিশ্ব গড়ে তুলতে যাবতীয় প্রয়াসে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শ্রী মোদী জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যাগুলির উদ্ভাবনী সমাধানের লক্ষ্যে পৃথক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক দপ্তর গঠন করেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাগুলির প্রতি শ্রী মোদী কতটা সংবেদনশীল, তার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটেছে প্যারিসে ২০১৫’তে আয়োজিত সিওপি-২১ শীর্ষ সম্মেলনে। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদী উচ্চ-পর্যায়ের আলাপ-আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়গুলি থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী জলবায়ুর প্রতি সুবিচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। ২০১৮ সালে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানরা আন্তর্জাতিক সৌরজোটের সূচনার জন্য ভারতে এসেছিলেন। এই উদ্যোগ এক উজ্জ্বল বিশ্বের জন্য সৌরশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাঁর প্রয়াসের স্বীকৃতি-স্বরূপ রাষ্ট্রসংঘ প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘চ্যাম্পিয়নস্ অফ দ্য আর্থ অ্যাওয়ার্ড’ সম্মানে ভূষিত করে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাগুলি আমাদের গ্রহকে আরও বেশি প্রাকৃতিক বিপর্যয়-প্রবণ করে তুলেছে। এই ভবিতব্যের প্রতি পূর্ণ সংবেদনশীল হয়ে শ্রী মোদী প্রযুক্তির সক্ষমতা এবং মানবসম্পদকে আরও দক্ষ করে তোলার মধ্য দিয়ে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি ২০০১ সালের ২৬শে জানুয়ারি বিধ্বংসী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত গুজরাটের আদল পাল্টে দিয়েছিলেন। একইভাবে, তিনি গুজরাটে বন্যা ও খরা প্রতিরোধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন, আন্তর্জাতিক স্তরে তা প্রশংসিত হয়েছিল।
প্রশাসনিক সংস্কারমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে শ্রী মোদী সর্বদাই নাগরিকদের ন্যায়-বিচারে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছেন। এই লক্ষ্যে তিনি গুজরাটে সাধারণ মানুষের সমস্যা মেটাতে সান্ধ্যকালীন আদালত চালু করেন। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর তিনি অতিসক্রিয় প্রশাসন ও সময়ানুগ রূপায়ণ সংক্রান্ত ‘প্রগতি’ পর্যালোচনার ব্যবস্থা শুরু করেন। উদ্দেশ্য ছিল, অগ্রগতি থমকে যাওয়া প্রকল্পগুলির রূপায়ণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা।
শ্রী মোদীর বৈদেশিক নীতির ফলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসাবে ভারতের প্রকৃত সম্ভাবনা ও ভূমিকার বাস্তবায়ন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথমবার শপথ গ্রহণের সময় সার্ক দেশগুলির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এবং দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় বিমস্টেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তাঁর ভাষণ সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। শ্রী মোদীই হলেন প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৭ বছর পর দ্বিপাক্ষিক সফরে নেপাল, ২৮ বছর পর অস্ট্রেলিয়া, তিন দশকেরও বেশি সময় পর ফিজি এবং ৩৪ বছর পর সংযুক্ত আরব আমীরশাহী ও সেশেলস্ সফরে গিয়েছিলেন। এছাড়াও, শ্রী মোদী রাষ্ট্রসংঘ, ব্রিকস্, সার্ক এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন, যেখানে বিশ্ব অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলিতে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী ও পরামর্শ সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একাধিক সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সৌদি আরবের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘সাশ অফ কিং আব্দুল্লাজিজ’; রাশিয়ার সর্বোচ্চ সম্মান ‘দ্য অর্ডার অফ দ্য হোলি অ্যাপস্টেল অ্যান্ড্রু দ্য ফার্স্ট’; প্যালেস্তাইনের ‘গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য স্টেট অফ প্যালেস্তাইন’; আফগানিস্তানের ‘আমির আব্দুল্লা খান’ পুরস্কার; সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর ‘জায়েদ মেডেল’; মালদ্বীপের ‘রুল অফ নিশান ইজুদ্দিন’ প্রভৃতি। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শান্তি ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ সিওল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।
নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রসংঘে বছরের একটি দিনকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসাবে ঘোষণার আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের প্রেক্ষিতে প্রথমবার ১৭৭টি রাষ্ট্র একযোগে এগিয়ে এসে ২১শে জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব অনুমোদন করে।
গুজরাটের একটি ছোট শহরে ১৯৫০ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর শ্রী মোদী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত। এই শ্রেণীকে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণী হিসাবে গণ্য করা হয়। তিনি এমন এক পরিবারে জন্ম নেন, যে পরিবারে ভালোবাসা ছিল অসীম, কিন্তু আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না। জীবনের প্রারম্ভিক বাধা-বিপত্তিগুলি তাঁকে কেবল কঠোর পরিশ্রমের মূল্যবোধই শেখায়নি, সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের অসহনীয় সংগ্রামগুলির প্রতিও তাঁকে সংবেদনশীল করে তুলেছিল। কঠিন পরিশ্রমের মূল্যবোধ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি অল্প বয়সেই নিজেকে মানুষ ও দেশের সেবায় নিয়োজিত করেছিলেন। জীবনের প্রথমদিকে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে যুক্ত হয়ে কাজ করেছেন। জাতীয়তাবাদী এই সংগঠনটি দেশ গঠনের কাজে যুক্ত্। পরে, তিনি জাতীয় ও রাজ্য স্তরে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হন। শ্রী মোদী গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি-ও অর্জন করেছেন।
‘জননেতা’ নরেন্দ্র মোদী নিজেকে জনসাধারণের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নিয়োজিত করেছেন এবং তাঁদের কল্যাণে যুক্ত রয়েছেন। সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে থাকার চেয়ে তাঁর কাছে বড় সন্তুষ্টির আর কিছু নেই। তাঁদের আনন্দ ও দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়াই তাঁর ব্রত। মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিতে তাঁর উপস্থিতির প্রকৃত দৃষ্টান্ত। তিনি ভারতের ‘টেকনো-সেভি’ বা প্রযুক্তি-বিচক্ষণ নেতাদের একজন। মানুষের কাছে পৌঁছতে এবং তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে তিনি ওয়েব প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ট্যুইটার, ইন্সটাগ্রাম, সাউন্ড ক্লাউড প্রভৃতিতে তিনি অতি সক্রিয়।
রাজনীতির পাশাপাশি, নরেন্দ্র মোদী সাহিত্যচর্চা করতে ভালোবাসেন। কবিতা রচনার পাশাপাশি, বহু গ্রন্থ লিখেছেন। তাঁর দিন শুরু হয় যোগচর্চার মধ্য দিয়ে, যা তাঁর দেহ ও মনকে অফুরন্ত শক্তি যোগায় এবং ব্যস্ততার মধ্যেও মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
http://www.narendramodi.in/categories/timeline
http://www.narendramodi.in/humble-beginnings-the-early-years
http://www.narendramodi.in/the-activist
http://www.narendramodi.in/organiser-par-excellence-man-with-the-midas-touch